সাইফুল ইসলাম :

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যাঁলা বেরসে এসেছেন তাই সবকিছুতেই পরিস্কার পরিছন্ন। এ পরিছন্নতা থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর স্বজনেরা। এরকম শংকার আলামত বাস্তবায়নের লক্ষণও দেখা গেছে-গতকাল প্রেসিডেন্ট যাবার পর পরই। অর্থাৎ হাসপাতাল পরিদর্শন করে প্রেসিডেন্ট চলে যাবার পর ৫ম তলার বেশ কিছু সিটের বেডসিট তুলে তাতে পুরানো বেড সিট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতালের পরিছন্নতা নিয়ে রামু জোয়ারিনালা থেকে আসা ও চিকিৎসাধীন রোগী হাবিবুল্লাহ বলেন, একদিন আগে হাসপাতালের পরিবেশ এই রকম ছিলো না। ৬ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট হাসপাতাল পরিদর্শনে আসার কথা শুনে ৫ ফেব্রুয়ারি রাত্রের দিকে পুরাতন বেড ও বেডসিট উঠিয়ে নতুন বেড ও বেডসিট দিয়েছে। পাশাপাশি ময়লা-আর্বজনা রাখার ছোট্ট ছোট্ট পাত্রে পলিথিন মুড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি হাসপাতালের নিচতলা থেকে পঞ্চমতলা পর্যন্ত বাইরে ও ভিতরে ধবধবে পরিস্কার আছে। আজকের পরেও এ ধরণের পরিস্কার ও পরিছন্ন থাকুক আশাব্যক্ত করছি।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সুইজারল্যান্ড প্রেসিডেন্ট কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) স্থাপিত রোহিঙ্গা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগী ও চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন। এসময় হাসপাতালে প্রতি ওয়ার্ডে দেখা গেছে, নতুন নতুন বেড, বেডের মধ্যে নতুন বেডসিট, রোগীর হুইল চেয়ার, ট্রলিবক্স, ময়লা-আর্বজনা ফেলার স্থানে পলিথিন মুড়ানোসহ সবকিছুতেই পরিস্কার পরিছন্নতা। এর আগের দিনে এধরণের কোন কিছু ছিল না বলে জানান চিকিৎসাধীন অনেক রোগি। এদিকে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট হাসপাতালকে দিয়েছে ১শ’টি উন্নত মানের বেড, ২০টি লকার, ৫০টি স্যালাইন রাখার স্টেইন, ২০টি ট্রলিসহ ভবিষ্যতে আরো সাহায্য করা হবে জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের দিকে উখিয়া থেকে রোগি দেখতে আসা স্বজন মহিবুল্লাহ নামে একব্যক্তি বলেন, হঠাৎ হাসপাতালের অবস্থা এত পরিস্কার পরিছন্ন কেন ? আমি ৫ ফেব্রুয়ারি সকালের দিকে হাসপাতালে এসে দেখি ঢুকার মতো কোন পরিবেশ ছিল না। সবদিকে অপরিস্কার, অপরিছন্ন ও দূর্গন্ধযুক্ত। কিছুক্ষন পরে শুনলাম হাসপাতালে নাকি সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট এসেছিলেন তাই এত পরিষ্কার-পরিছন্ন। ভবিষ্যতেও এধরনের পরিস্কার ও পরিছন্ন থাকুক এমন আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

চিকিৎসাধীন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগী জানান, সবকিছু পরিস্কার থাকলেও প্রেসিডেন্ট যাওয়ার পর পরই বেড থেকে নতুন বেটসিট উঠিয়ে নিয়ে পুরাতন বেটসিগুলো বিছিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট যেসময় এসেছিলেন সেসময় হুইল চেয়ার দেখেছি কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে না। আস্তে আস্তে মনে হয় সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবে।

এ নতুনত্বের বিষয়ে হাসপাতাল ওয়ার্ড সর্দার মেহেরুন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১ম তলা থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে যে নতুন জিনিসপত্র দিয়েছি তা থাকবে। এ গুলো উঠিয়ে নেয়া হবেনা।